(বিশ্বনাথা দয়োহনুসারতঃ)
ড. সাধনকুমার পাত্র
₹100.00
(বিশ্বনাথা দয়োহনুসারতঃ)
ড. সাধনকুমার পাত্র
(বিশ্বনাথা দয়োহনুসারতঃ)
ড. সাধনকুমার পাত্র
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
সম্ভবত পৃথিবীর মানুষকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়। এক যারা প্যারিস দেখেছে; দুই যারা প্যরিস দেখেনি। সম্ভবত পৃথিবীর সব কবিকেও দু-ভাগে ভাগ করা যায়। এক যাদের মাতৃভূমি শুধু তাদের নিজেরই দেশ: দুই যাদের মাতৃভূমি তাদের নিজের দেশ ছাড়াও তার একটি শহর_ প্যারিস। ইতিহাসে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার মতন শহর প্যারিস নয়, উলটে ইতিহাসই এখানে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। এখানে কেউ নারীর হাত ধরে প্রবিষ্ট হয়ে অবশেষে কবিতা, শিল্প কিংবা দর্শনের হাত মুঠো করে ধরে নিষ্ক্রান্ত হয়। আবার কেউ কবিতা, শিল্প বা দর্শনের হাত পাকড়ে ঢোকে এবং বার হয় নারীর আঁচল আঁকড়ে। প্যারিস নারীর মতন টানে, প্যারিসের নারীরা নিয়তির মতন টানে। আর সেই টানে। আর সেই টানে অভিমন্যুর মতো চক্রব্যূহে প্রবিষ্ট লেখক আর নিষ্ক্রান্ত হতে পারেন না কুহকিনী এ শহরের মায়াজাল থেকে। প্যারিস তাই তাঁর কাছে সতেরোশো উননব্বই-এর লঁসিয়ঁ রেজি্ম, য়ুগো, কিংবা মালার্মের লিতেরাচুর, দেরিদার অবিনির্মাণ, পাস্কালের হৃদয়ের যুক্তি, গোদার-কে বোঝার বৃথা চেষ্টা, ক্রফোর ফ্রিজ শট, পোলানস্কির, জীবনসিনেমা, ব্রিজিং বার্ডোর লাস্য, কামুর ফুটবল, পারফিউমের সুগন্ধ, কনিয়াকের ঘ্রাণ আর রাতের আলো-আধারিতে উদ্দাম স্ট্রিপটিজ্। কাল থেকে শুরু হয়ে আজ ছুঁয়ে প্যারিস প্রবহমান আগামী কালে। চিরযৌবনা এ নগরীর শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মননের মায়াবী রূপকথা প্যারিসপ্রেমিক লেখকের কলমে।
বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে আমরা সকলেই জানি। কিন্তু তাই বলে বিশ্ব ক্ষীণায়ন? প্রতিদিন পূজ্য দেবমূর্তির কাছে অর্পিত ধূপধুনো_তা থেকেও যে ক্যান্সার হতে পারে, সে খবর আমরা ক-জন রাখি? কখনো আঘ্রাণ নিয়ে কি বুঝেছি ফুলেরা হারিয়ে ফেলেছে তাদের গন্ধ? সূর্যস্নাত সকালে বুঝতে পেরেছি কি আজ আরও একটু কমে এল অনির্বচনীয় সেই আলো? পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা সন্ধ্যায় আমরা নির্বাসনে পাঠাই সবুজকে। আর আমাদের চেনা পৃথিবীর চেনা-রূপ-রং-গন্ধ ক্রমশই হারিয়ে যেতে থাকে কোনো এক বিষণ্ণ অচিনপুরে। টেক্টট বুক-এর আড়ষ্ট নিয়মতান্ত্রিকতায় উপস্থাপিত ই ভি এস ছাত্র-শিক্ষক সকলের অবহেলার বিষয়। আর পরিবেশ সচেতনতা? সে তো সেমিনার আর পোস্টারে মুখ ঢেকেই কর্তব্যসমাধা। পরিবেশকে বাঁচানোর বীজমন্ত্র নিয়ে চাক্ষুষ কাজে নেমে পড়া, হাতে হাত মিলিয়ে গড়ে তোলা প্রবল প্রতিরোধ_সে রকমটাও কি কখনো সম্ভব হতে পারে? পারে। উত্তরবঙ্গের এক ভূমিপুত্রই সেই অলীককে আত্মস্থ করেছেন সংকল্প ও সাধনে। জেলার বিলুপ্তপ্রায় মাছেদের বাঁচানোর জন্য রাষ্ট্রসংঘের কাছে দরবার কিংবা আত্রেয়ীতে প্রতিমা বিসর্জনজনিত দূষণ প্রতিরোধের জন্য নিজের খরচে নেওয়া উদ্যোগ_ বরাবরই লাগামছাড়া তিনি। চিপকো আন্দোলনকে উত্তরবঙ্গেও প্রাসঙ্গিক করেছেন একাধিক গাছ বাঁচিয়ে। প্রতীকী কায়দায় বরাবর অবিশ্বাসী তুহিনের জল-নদী-গাছ বাঁচানোর এই লড়াইয়ে সবসময় সঙ্গে ছিল, আছে একদল দলছুট। লেখার জন্য লেখা নয়, সংকলিত উনিশটি প্রবন্ধ আসলে পরিবেশ নিয়ে বালুরঘাটের বহুগুনার প্রতিস্পর্ধী আন্দোলনের একেকটি স্পন্দন।
কবির নিবাসের সঙ্গে তার সৃষ্টিকর্মের সরাসরি কি কোনো সম্পর্ক আছে? প্রশ্নটির বিপ্রতীপে অজান্তেই তৈরি হয় আর একটি প্রশ্ন : কবির কোনো নির্দিষ্ট সৃষ্টিকর্ম কি অনুপ্রাণিত হতে পারে তার সৃজনক্ষেত্রের দ্বারা? ওয়র্ডসওয়র্থের ‘ইমমরটালিটি ওড’ কি আদৌ সম্ভব ছিল তার লেক ডিস্ট্রিক্ট-এর পরিপ্রেক্ষিত ছাড়া? এরকম অনেক প্রশ্নকেই প্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে যদি আমরা কালোত্তীর্ণ কবি-সাহিত্যিকদের জীবন পরিভ্রমণ করি। খুজে বার করতে চেষ্টা করি কোথায় কোথায় তাঁরা ছিলেন কোন সময় তাঁরা ছিলেন, কারা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন_এরকম নানা কিঞ্চিৎকর এমনকী অকিঞ্চিৎকর তথ্যও। এভাবেই একদিকে যেমন আবিষ্কৃত হতে থাকে অনেক নতুন দিগন্ত, অন্যদিকে মেধাবী পাঠক ছুঁয়ে যেতে পারেন বিরল কেনো সাহিত্যমুহূর্ত।
আশিসতরু মুখোপাধ্যায়
অমর পাল লোকগানের সেই বিরল শিল্পী যাঁর কণ্ঠে গান আর শুধু গান থাকে না, হয়ে ওঠে দর্শন। ভাটিয়ালি গানের প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পীর জীবনও তাঁর কণ্ঠ-নিঃসৃত সংগীতের মূর্ছনার মতো ব্যঞ্জনাময়। এই গ্রন্থেই প্রথম ধরা রইল তাঁর কিংবদন্তী হয়ে ওঠার দীর্ঘ ঘটনাবহুল সংগ্রামময় কাহিনি। সেই আখ্যান তাঁর গানের মতোই সরল, মোহময় ও জাদুকরি। কিন্তু কেন এ মুহূর্তে অমর পালই দুই বাংলায় লোকগানের সবচেয়ে সম্মানিত স্বর? তাঁর কণ্ঠে আছে সেই হিরণ্ময় ঐশ্বর্য, যা আমাদের রোমাঞ্চিত করে অনির্বচনীয় আবিষ্কারের পুলকে। সে আবিষ্কার শাশ্বত এক জীবনবোধকে খুঁজে পাওয়ার আনন্দে প্রোজ্জ্বল। প্রান্তিক মানুষের সহজিয়া জীবনে যে জাদু লুকিয়ে আছে, তার অপরূপ সৌন্দর্যকে আমরা চিনতে পেরেছি তাঁরই সৌজন্যে। ভাঙা নাওয়ের যাত্রী হয়ে জীবনের অকুল দরিয়ায় এই যে আমাদের অনির্দেশ ভেসে চলা, তার সূত্র তো বাঁধা আছে ওই সুরসাধকেরই মরমিয়া কন্ঠস্বরে।
সম্পাদনা দেবব্রত ঘোষ
জন্মের একশো পঁচিশ বছর পরেও যদি কোনো মানুষ একটি দেশের প্রাত্যহিক জীবনে ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে রয়ে যান, তবে তাঁর জীবন ও কর্মের পুনর্মূল্যায়ন এক আশু কর্তব্য। বাবাসাহেব আম্বেদকর এমনই এক অলোকসামান্য ব্যক্তিত্ব। শুধু বর্ণবৈষম্য কিংবা অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেই যাওয়া নয়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের তীব্র সমালোচনাকারী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হিসেবেও তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভা। ভারতীয় দলিত রাজনীতির প্রবক্তা তথা সংগঠকরূপে তো বটেই, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও তিনি ছিলেন এক আপোশহীন যোদ্ধা। ভারতীয় সংবিধানের রূপকার এই মানুষটিই আবার ছিলেন হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্ক ও পাকিস্তান গঠনের আন্দোলন প্রসঙ্গে স্পষ্টবাদী এক অনন্য মতের প্রবর্তক। যেহেতু তিনি ছিলেন সব ধরনের শোষণের বিরুদ্ধেই মূর্ত প্রতিবাদ, তাই নারীর অধিকার নিয়েও বাবাসাহেব পরিচয় রেখেছিলেন সুচিন্তিত ভাবনার। গান্ধিবাদী কংগ্রেসি সামাজিক-রাজনৈতিক নীতি ও কার্যক্রমের কুণ্ঠাহীন সমালোচক এই ভীমরাও রামজি আম্বেদকর ছিলেন আদ্যন্ত জাতীয়তাবাদী।
বিশ্বনাথ রায়
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর প্রাণপুরুষ তথা উনিশ শতকীয় চর্চায় বাঙালির পথপ্রদর্শক ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে আমরা এতাবৎ প্রায় অনবহিতই ছিলাম। দৌহিত্র বিশ্বনাথ রায় প্রণীত এই সংক্ষিপ্ত ব্রজেন্দ্র-আলেখ্য সে অভাব বহুলাংশে মেটাবে।
Reviews
There are no reviews yet.